Tuesday, September 17, 2024
Google search engine
HomeUncategorizedফিলিস্তিনি শিশুদের গুলির লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ইসরায়েলি স্নাইপাররা

ফিলিস্তিনি শিশুদের গুলির লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে ইসরায়েলি স্নাইপাররা


ডা. ফজিয়া আলভি দক্ষিণ গাজার বিধ্বস্ত ইউরোপীয় পাবলিক হাসপাতালে তার শেষ দিনে যখন নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে রাউন্ড দিচ্ছিলেন তখন তিনি মুখে আঘাত পাওয়া এবং অক্সিজেনের নল লাগানো দুই শিশুর পাশে দাঁড়ান।

ডা. ফজিয়া বলেন, ‘আমি নার্সকে জিজ্ঞেস করলাম,  এদের আঘাতের ইতিহাস কী? তিনি জানান, তাদের কয়েক ঘন্টা আগে আনা হয়েছিল। তাদের মস্তিষ্কে স্নাইপারের গুলি বিদ্ধ হয়েছিল। তারা সাত বা আট বছর বয়সী ছিল।’

নার্সের এই কথা শোনার পর মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে পড়েন কানাডিয়ান চিকিৎসক ফজিয়া। কারণ ইসরায়েলি সেনাদের গুলির আঘাত পাওয়া শিশুদের চিকিৎসা এটাই তার প্রথম ছিল না। তিনি জানতেন,  একটি উচ্চ-ক্যালিবার বুলেট একটি শিশুর শরীরের কতটুকু ক্ষতি করতে পারে।

ডা. ফজিয়া বলেন, এই শিশুরা ‘কথা বলতে পারছিল না, প্যারাপ্লেজিক। তারা আক্ষরিক অর্থেই সেই বিছানাগুলো নিথর হয়ে শুয়ে ছিল। শুধু তারাই ছিল না। আমি এমনকি ছোট বাচ্চাদেরও দেখেছি যাদের মাথায় ও বুকে সরাসরি স্নাইপারের গুলি লেগেছে। তারা যোদ্ধা ছিল না, তারা ছিল ছোট শিশু।’

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গাজায় ইসরায়েলের মাসব্যাপী হামলায় নিহত হয়েছে ৩২ হাজারেরও বেশি মানুষ। এদের মধ্যে প্রতি তিন জনের এক জন শিশু। নিহত ছাড়াও আরও কয়েক হাজার যুবক অঙ্গবিচ্ছেদসহ গুরুতর জখম হয়েছে।

নয়জন ডাক্তার চলতি বছর গাজার হাসপাতালে কাজ করার বিষয়ে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিানের কাছে তাদের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন। এদের মধ্যে এক জন ছাড়া বাকী সবাই বিদেশি। তাদের সাধারণ মূল্যায়ন ছিল যে, বেশিরভাগ মৃত এবং আহত শিশু আবাসিক এলাকাগুলোতে ইসরায়েলের ব্যাপক বোমাবর্ষণের সময় আঘাত পেয়েছিল বা অগ্নিদগ্ধ হয়েছিল। কিছু ক্ষেত্রে পুরো পরিবার নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছিল। অন্যরা ভবন ধসে নিহত বা আহত হয়েছে।

তবে চিকিৎসকরা আরও জানিয়েছেন, অনেক শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তি মাথা বা বুকে গুলিবিদ্ধ হয়েছিল। এরা যোদ্ধা ছিল না। বিবরণ শুনে তাদের মনে হয়েছে, এসব হতাহতদের সরাসরি টার্গেট করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের একটি দল ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বিরুদ্ধে ফিলিস্তিনি বেসামরিক ব্যক্তিদের লক্ষ্যবস্তু করার অভিযোগ এনেছিল। এদের মধ্যে অনেকেই শিশু ছিল যারা আশ্রয় নিয়েছিল শিবিরে।

বিশেষজ্ঞ দলটি বলেছে, ‘ফিলিস্তিনি নারী ও শিশুদের ইচ্ছাকৃতভাবে লক্ষ্যবস্তু ও বিচারবহির্ভূত হত্যার খবরে আমরা হতবাক হয়েছি, অথচ তারা আশ্রয় চেয়েছিল বা পালিয়ে যাচ্ছিল। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বা সহযোগী বাহিনীর হাতে নিহত হওয়ার সময় তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে সাদা কাপড়ের টুকরো ছিল বলে জানা গেছে।’



RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments