Thursday, September 19, 2024
Google search engine
HomeUncategorizedপাহাড়ের হানিকুইন আনারস, দামে-ফলনে খুশি চাষিরা 

পাহাড়ের হানিকুইন আনারস, দামে-ফলনে খুশি চাষিরা 


রাঙামাটির হাটে-বাজারে বিক্রি হচ্ছে হানিকুইন জাতের আনারস। শহরের বনরুপা বাজার, সমতাঘাট, কলেজ গেট, তবলছড়ি ও ভেদভেদী বাজারে মিলছে রসে টইটম্বুর, সুস্বাদু ও মিষ্টি পাহাড়ি আনারসটি। পার্বত্য এই জেলার কৃষকরা আনারসের আগাম ভালো ফলন এবং ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি। 

রাঙামাটি কৃষি বিভাগ জানায়, জেলায় এবার ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে আনারস আবাদ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬২ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন। জেলায় সবচেয়ে বেশি আনারস উৎপাদন হয় নানিয়ারচর উপজেলায়। এরপর সদর, কাউখালী ও বাঘাইছড়ি উপজেলায়। 

জেলা কৃষি বিভাগ জানান, রাঙামাটিতে গত দুই বছর ধরে মালয়েশিয়া থেকে এমডি-২ জাতের আনারসের জাত এনে চাষ করা হচ্ছে। এ জাতের আনারস রাঙামাটির বাগানের শতকরা ৭০ ভাগে উৎপাদন হয়েছে। এই জাতের আনারস লোকাল জাতের চেয়ে ঘ্রাণ এবং স্বাদ বেশি। দুই বছর ধরে সরকারের বিশেষ প্রণোদনায় এটি এখানে চাষ হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, রাঙামাটি শহরে বনরূপা বাজারের সমতাঘাটে সারি সারি ইঞ্জিন চালিত নৌকায় হানিকুইন জাতের আনারস। বিভিন্ন উপজেলা থেকে চাষিরা আনারস এনে পাইকারি ব্যবসায়ীর আশায় বসে আছেন এবং বিক্রিও করছেন। আগাম ভালো ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় খুশি চাষিরা। জেলা শহরের বাইরে ঢাকা, চট্টগ্রামেও এই আনারস পাঠানো হচ্ছে।

রাঙামাটি শহরের বনরুপার সমতাঘাট এলাকায় কুমিল্লা দেবীদ্বার থেকে আনারস কিনতে আসা পাইকারি ব্যবসায়ী হাবিব বলেন, তিনি বড়-ছোট মিলে ৫ হাজার আনারস কিনেছেন। প্রতি পিসের দাম পড়েছে ১৩-১৭ টাকা। কুমিল্লার বাজারে ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন। 

রাঙামাটির সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা থেকে আনারস বিক্রি করতে আসা চাষি শান্তিপ্রিয় চাকমা বলেন, তিনি ১২ হাজার আনারস রোপণ করেন। তবে মাত্র আড়াই হাজার আনারস পেয়েছেন। বানর আর কাঠবিড়ালি বেশিরভাগ আনারস নষ্ট করে ফেলেছে। তিনি বলেন, বাজারে আনারসের দাম মোটামুটি ভালো আছে। আজকের বাজারে ছোট সাইজের আনারস প্রতি পিস ১৪ টাকা, আর বড় সাইজের পিস প্রতি ২৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। 

রাঙামাটির নানিয়ারচরের কেরেতছড়ির আনারস চাষি কালো বিকাশ চাকমা বলেন, গত বছরের চেয়ে আনারসের দাম ভালো। এবার আনারস বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন। তিনি ৩ হাজার ৫০০ আনারস বিক্রির জন্য নিয়ে এসেছেন।

রাঙামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান বলেন, রাঙামাটি অঞ্চলের আনারস বিখ্যাত। এটা যেহেতু পর্যটন এলাকা এবং এখানে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা বেড়াতে আসেন, তারা আনারসের প্রতি আকৃষ্ট হন। এখানে হানিকুইন জাতের আনারসের উৎপাদন ভালো হয়। 

তিনি বলেন, এখানে বেশ কয়েক বছর ধরে আগাম আনারসের ফলন হয়ে থাকে। এখানকার আনারসের ক্ষেতে পিজিআর (প্লান গ্রোথ হরমোন) ধরনের জৈব রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারে দ্রুত উৎপাদন হয়ে থাকে। তবে এই রাসায়নিক ব্যবহার শরীরের জন্য ক্ষতিকর না হলেও এতে জেলায় আনারসের ঐতিহ্য এবং স্বাদ রয়েছে, তা অনেকাংশে কমে যায়। 

তিনি বলেন, বর্তমানে চাষিরা আনারসের ভালো দাম পাচ্ছে। এক সময় এখানে আনারস বিক্রি না হলে চাষিরা রাস্তায় বা পানিতে ফেলে দিতেন। এখন কিন্তু সেই অবস্থা নেই। রাঙামাটির নানিয়ারচরে আনারসের ভালো উৎপাদন হয়। তা দিন দিন বাড়ছে। 



RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments