Friday, September 20, 2024
Google search engine
HomeUncategorizedঅরক্ষিত স্বাধীনতা স্তম্ভ, যানবাহনের ধাক্কায় ভেঙে গেছে বেদি

অরক্ষিত স্বাধীনতা স্তম্ভ, যানবাহনের ধাক্কায় ভেঙে গেছে বেদি


কুমিল্লার দেবিদ্বারে শহিদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম ফলকসহ নির্মিত স্বাধীনতা স্তম্ভটি দীর্ঘদিন ধরে অরক্ষিত অবস্থায় আছে। কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের পাশে নিউমার্কেট চত্বরে নির্মিত স্তম্ভটিতে নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় যানবাহনের ধাক্কায় ইতোমধ্যে ভেঙে গেছে মূল বেদির অনেকটা। জুতা পায়ে পথচারীদের অবাধ বিচরণ, গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীদের পদভারে মর্যাদা হারাচ্ছে স্তম্ভটি। ফলে নষ্ট হচ্ছে স্বাধীনতা স্তম্ভের নান্দনিকতা।

গতকাল শনিবার (২৩ মার্চ) বিকেলে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, স্বাধীনতা স্তম্ভের সৌন্দর্য বাড়ানোর জন্য প্রায় ২০ থেকে ২৫টি রঙিন বৈদ্যুতক বাতি ছিল, যা বর্তমানে উধাও। বেষ্টনী না থাকায় বিভিন্ন যানবাহনের ধাক্কায় স্তম্ভের চারদিকের টাইলসগুলোও ভেঙে গেছে। স্তম্ভটি কুমিল্লা-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে হওয়ায় অনেকে জুতা পরে এটির ওপর দিয়ে হাঁটেন। তাছাড়া, স্তম্ভের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে সিগারেটের খালি প্যাকেটসহ বিভিন্ন ধরেনের ময়লা-আবর্জনা। 

জানা গেছে, দেবিদ্বার নিউ মার্কেট চত্বরে প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাধীনতা স্তম্ভটি নির্মাণ করা হয়। এই স্বাধীনতা স্তম্ভটি বাংলাদেশের ইতিহাসের ৭টি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়কে ধারণ করে নির্মাণ করা হয়েছিল। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৬ সালের শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধকে প্রতীক হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে স্তম্ভটিতে। পাশে দৃষ্টিনন্দন নাম ফলকে লেখা হয়েছে- দেবিদ্বার উপজেলার মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ২৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নাম।

নির্মাণের পর থেকে স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস ও দেবিদ্বার মুক্ত দিবসসহ নানা দিবসে স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা প্রশাসন, থানা প্রসাশনসহ বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন এখানে পুস্পস্তবক অর্পণ করে। প্রতিটি দিবসে স্বাধীনতা স্তম্ভের বেদি পরিচ্ছন্ন করা হলেও বেষ্টনী স্থাপনে কেউ উদ্যোগ নেয়নি। যার কারণে বেদির চার পাশে সিএনজি অটোরিবশা ও ইজিবাইকের জটলা লেগে থাকে সবসময়। এসব গাড়ির ধাক্কায় বেদির অনেক স্থানের টাইলস খসে গেছে, ভেঙে পড়েছে মূল বেদির অংশ বিশেষ।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে দেবিদ্বারবাসীর অবদান দেশবাসী শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণে রাখলেও, আমরা একটা স্বাধীনতা স্তম্ভের মর্যাদা রাখতে পারিনি। এটা খুবই দুঃখজনক। স্বাধীনতা স্তম্ভটি দ্রুত সংস্কার করে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বেষ্টনী নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া উচিত।

দেবিদ্বার পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তা বেষ্টনী না থাকায় স্বাধীনতা স্তম্ভটি ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমরা পৌরসভা থেকে স্তম্ভটি সংস্কার করে নিরাপত্তা বেষ্টনী দিয়ে সেটি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করবো। স্বাধনীতা স্তম্ভ থেকে কলেজ রোডের দিকে রোড ডিভাইডার দিয়ে দেব যাতে স্তম্ভের কাছ ঘেঁষে যানবাহনের জটলা সৃষ্টি না হয়।



RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

- Advertisment -

Most Popular

Recent Comments